গভর্নরদের বৈশ্বিক সূচকের একটি র্যাঙ্কিংয়ে “ডি গ্রেড” পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। নিউইয়র্কের গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিন এই র্যাঙ্কিং করেছে।
তারা বলছে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, মুদ্রার অবমূল্যায়ন, অর্থনীতির কাঠামোগত দুর্বলতা, বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠ নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য কারণে বাংলাদেশ এই অবস্থানে উঠে এসেছে।
“সেন্ট্রাল ব্যাংকার রিপোর্ট কার্ড” শিরোনামে ওই প্রতিবেদনে “এ প্লাস” গ্রেড পেয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর শক্তিকান্ত দাস, ভিয়েতনামের নগুয়েন থি হং এবং সুইজারল্যান্ডের থমাস জর্ডান।
এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৬ জন গভর্নরের মধ্যে শুধুমাত্র লাওশিয়ান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বাউনলেউয়া সিনক্সায়ভোরাভং “এফ গ্রেড নিয়ে আব্দুর রউফ তালুকদারের চেয়ে পিছিয়ে আছেন।
শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়াত্ব ও তীব্র মুদ্রাস্ফীতি থেকে উদ্ধার করার সময় ব্যাংকের শীর্ষ পদে থাকা নন্দলাল ওয়েরাসিংহে “এ- (এ মাইনাস)” পেয়েছেন।
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে, নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর মহা প্রসাদ অধিকারী “বি-গ্রেডে” আছেন। তিনি আব্দুর রউফ তালুকদার ও “সি-গ্রেড” পাওয়া পাকিস্তানের জামিল আহমেদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার সম্পর্কে বলা হয়, কোভিড-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫.৬%। মূল্যস্ফীতির হার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৫% লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেশি হলেও মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে টাকার ৯.৫% অবমূল্যায়ন হয়। দেশের বাজারে ডলার–সংকটে হিমশিম খান আমদানিকারকেরা। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি ও খাদ্যমূল্য অনেকটা বেড়ে মূল্যস্ফীতি লাগামহীন হয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয় বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতির কাঠামোগত দুর্বলতা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর সরকারের ৬০% নিয়ন্ত্রণ ২০২২ সালের মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কার মতো সুযোগ দিয়েছে।
১৯৯৪ সাল থেকে, গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গভর্নরদের গ্রেডিং করছে।
সেন্ট্রাল ব্যাংকার রিপোর্ট কার্ড সাময়িকীর বার্ষিক প্রকাশনা হিসেবে নিয়মিত প্রকাশ হয়।
১০১টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের সর্বশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনের পদ্ধতির বিষয়ে এটি বলেছে, প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের “এ” থেকে “এফ” স্কেলে রেট দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে “এ” সর্বোচ্চ গ্রেড ও “এফ” সর্বনিম্ন।
২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ১ জুন পর্যন্ত ব্যাংকারদের কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন করা হয়েছে।
রবিবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।