গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও সমাধান

,
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও সমাধান
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও সমাধান

গ্যাস্ট্রিক বা আলসারকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে পেপটিক আলসার। পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি হলে এ সমস্যা দেখা দেয়। জীবনাচার বদলানোই গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান। জানাচ্ছেন ডা. তাহমিনা করিম অ্যানি।আমরা যেসব খাবার খাই তা খাদ্যনালির ভেতর দিয়ে পাকস্থলীতে যায়। পাকস্থলীর হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড খাবার হজমপ্রক্রিয়া গতিশীল রাখে। কোনো কারণে এই হাইড্রোক্লোরিক বেশি নিঃসরণ হলে পাকস্থলীর আবরণে প্রদাহ তৈরি করে। তখনই অ্যাসিডিটি বা পেপটিক আলসার দেখা দেয়। পেপটিক আলসারের প্রধান কারণ অনিয়মিত ও অস্বাস্থ্যকর খাবার, তেলে ভাজা ও মসলাদার খাবার বেশি খাওয়া, ধূমপান, নিয়মিত কোমল পানীয় পান করা এবং পানি কম খাওয়া। এ ছাড়া ব্যথানাশক ওষুধ দীর্ঘদিন খেলেও এ সমস্যা হতে পারে।

করনীয়ঃ

পেপটিক আলসার থেকে বাঁচতে নিয়মিত এবং সময়মতো খাবার গ্রহণ সবচেয়ে জরুরি। পাশাপাশি ভাজাপোড়া ও মসলাদার খাবার বাদ দেওয়া, দুশ্চিন্তা পরিহার, পর্যাপ্ত ঘুম এবং ধূমপান বন্ধ করতে হবে। ব্যথানাশক ওষুধ অর্থাৎ অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ সেবন থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া দৈনন্দিন জীবনে অভ্যাসগত কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।

সঠিক হজমের জন্য খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া উচিত। খাবার সঠিকভাবে চিবিয়ে খেলে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড নিঃসরণের পরিমাণ সঠিক থাকে। ফলে বাড়তি গ্যাস থেকে রেহাই মিলবে।প্রতিদিন খাবারের মেন্যুতে অন্তত একটি হলেও যেন ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার থাকে, তা নিশ্চিত করুন। সেটা ল্যাক্সিটেভ হিসেবে কাজ করবে। দূর করবে কোষ্ঠকাঠিন্য। এতে গ্যাস তৈরি হবে না। যেমন—শাকসবজি, কলা, ঢ্যাঁড়শ ইত্যাদি। এ ছাড়া গ্যাসের সমস্যা বেশি হলে নিয়মিত রাতে শোবার আগে ইসুবগুল পানিতে গুলিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পান করুন।

খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি পান না করে আধা ঘণ্টা পর পানি পান করুন। খাবারের মাঝখানে বা খাবার শেষে পানি খেতেই হলে এক ঢোকের বেশি নয়। অ্যাসিডিটির জ্বালাপোড়া, পেট ফাঁপার সমস্যা থেকে বাঁচতে প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পানের অভ্যাস করুন। নিয়মিত সঠিক মাত্রায় পানি পান করলে অ্যাসিডিটির আশঙ্কা কমে যাবে।

রাতের খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিছানায় শুয়ে পড়বেন না। কমপক্ষে এক থেকে দুই ঘণ্টা পর বিছানায় যান। ঘুমানোর সময় মাথার দিকটা একটু উঁচু করে ঘুমালে আরাম পাবেন। এ জন্য একটু উঁচু বালিশ ব্যবহার করা ভালো।

খাবারের পরপর চা, কফি বা ধূমপান করবেন না। খাবারের দুই ঘণ্টা পর চা-কফি খেতে পারেন। কিন্তু ধূমপান একেবারে বাদ দিতে হবে।

বেশি ওজন থাকলে নিয়ন্ত্রণে আনুন। নিয়মিত সকালে নাশতার আগে এবং রাতে খাবারের পর ১৫-২০ মিনিট হাঁটলে পেপটিক আলসারের সমস্যা কমে যাবে।

চিকিৎসা পেপটিক আলসারের রোগীরা সাধারণত অ্যান্টাসিড এবং এ জাতীয় ওষুধ সেবনে উপকৃত হন। তবে দীর্ঘদিন সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ সেবনের পরও যদি রোগী ভালো না হন, সে ক্ষেত্রে অপারেশন করিয়ে রোগী উপকৃত হতে পারেন।

ডেইলি এইনগরে ডট কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও সমাধান

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও সমাধান
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও সমাধান

গ্যাস্ট্রিক বা আলসারকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে পেপটিক আলসার। পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি হলে এ সমস্যা দেখা দেয়। জীবনাচার বদলানোই গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান। জানাচ্ছেন ডা. তাহমিনা করিম অ্যানি।আমরা যেসব খাবার খাই তা খাদ্যনালির ভেতর দিয়ে পাকস্থলীতে যায়। পাকস্থলীর হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড খাবার হজমপ্রক্রিয়া গতিশীল রাখে। কোনো কারণে এই হাইড্রোক্লোরিক বেশি নিঃসরণ হলে পাকস্থলীর আবরণে প্রদাহ তৈরি করে। তখনই অ্যাসিডিটি বা পেপটিক আলসার দেখা দেয়। পেপটিক আলসারের প্রধান কারণ অনিয়মিত ও অস্বাস্থ্যকর খাবার, তেলে ভাজা ও মসলাদার খাবার বেশি খাওয়া, ধূমপান, নিয়মিত কোমল পানীয় পান করা এবং পানি কম খাওয়া। এ ছাড়া ব্যথানাশক ওষুধ দীর্ঘদিন খেলেও এ সমস্যা হতে পারে।

করনীয়ঃ

পেপটিক আলসার থেকে বাঁচতে নিয়মিত এবং সময়মতো খাবার গ্রহণ সবচেয়ে জরুরি। পাশাপাশি ভাজাপোড়া ও মসলাদার খাবার বাদ দেওয়া, দুশ্চিন্তা পরিহার, পর্যাপ্ত ঘুম এবং ধূমপান বন্ধ করতে হবে। ব্যথানাশক ওষুধ অর্থাৎ অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ সেবন থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া দৈনন্দিন জীবনে অভ্যাসগত কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।

সঠিক হজমের জন্য খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া উচিত। খাবার সঠিকভাবে চিবিয়ে খেলে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড নিঃসরণের পরিমাণ সঠিক থাকে। ফলে বাড়তি গ্যাস থেকে রেহাই মিলবে।প্রতিদিন খাবারের মেন্যুতে অন্তত একটি হলেও যেন ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার থাকে, তা নিশ্চিত করুন। সেটা ল্যাক্সিটেভ হিসেবে কাজ করবে। দূর করবে কোষ্ঠকাঠিন্য। এতে গ্যাস তৈরি হবে না। যেমন—শাকসবজি, কলা, ঢ্যাঁড়শ ইত্যাদি। এ ছাড়া গ্যাসের সমস্যা বেশি হলে নিয়মিত রাতে শোবার আগে ইসুবগুল পানিতে গুলিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পান করুন।

খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি পান না করে আধা ঘণ্টা পর পানি পান করুন। খাবারের মাঝখানে বা খাবার শেষে পানি খেতেই হলে এক ঢোকের বেশি নয়। অ্যাসিডিটির জ্বালাপোড়া, পেট ফাঁপার সমস্যা থেকে বাঁচতে প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পানের অভ্যাস করুন। নিয়মিত সঠিক মাত্রায় পানি পান করলে অ্যাসিডিটির আশঙ্কা কমে যাবে।

রাতের খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিছানায় শুয়ে পড়বেন না। কমপক্ষে এক থেকে দুই ঘণ্টা পর বিছানায় যান। ঘুমানোর সময় মাথার দিকটা একটু উঁচু করে ঘুমালে আরাম পাবেন। এ জন্য একটু উঁচু বালিশ ব্যবহার করা ভালো।

খাবারের পরপর চা, কফি বা ধূমপান করবেন না। খাবারের দুই ঘণ্টা পর চা-কফি খেতে পারেন। কিন্তু ধূমপান একেবারে বাদ দিতে হবে।

বেশি ওজন থাকলে নিয়ন্ত্রণে আনুন। নিয়মিত সকালে নাশতার আগে এবং রাতে খাবারের পর ১৫-২০ মিনিট হাঁটলে পেপটিক আলসারের সমস্যা কমে যাবে।

চিকিৎসা পেপটিক আলসারের রোগীরা সাধারণত অ্যান্টাসিড এবং এ জাতীয় ওষুধ সেবনে উপকৃত হন। তবে দীর্ঘদিন সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ সেবনের পরও যদি রোগী ভালো না হন, সে ক্ষেত্রে অপারেশন করিয়ে রোগী উপকৃত হতে পারেন।

ডেইলি এইনগরে ডট কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download