হলিউডে প্রকৃত বন্ধুত্বের যে কয়টি উদাহরণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী ক্যামেরন ডায়াজ ও ড্রিউ ব্যারিমোরের বন্ধুত্ব। দুজনে দীর্ঘ সময়কাল ধরেই একে অপরের বন্ধু হয়ে পাশে রয়েছেন। সম্প্রতি ক্যামেরন ডায়াজ ফিরছেন চলচ্চিত্রে। তার আসন্ন চলচ্চিত্র ‘ব্যাক ইন অ্যাকশন’ নিয়ে প্রচণ্ড উচ্ছ্বসিত দীর্ঘদিনের বন্ধু ব্যারিমোর। ডায়াজের প্রত্যাবর্তনের সংবাদটি তিনিই প্রকাশ করেন। দীর্ঘদিনের বন্ধুর পর্দায় ফিরে আসায় দারুণ খুশি ব্যারিমোর। সেই সঙ্গে প্রকাশ করেছেন নিজের অনুভূতিও।
এদিকে, সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাৎকারে বন্ধু ব্যারিমোরের অতীত জীবনের ভয়াবহ অধ্যায় নিয়ে কথা বলেছেন ডায়াজ। ব্যারিমোরের মাদক জীবনের ভয়াবহ সময়কাল স্মরণ করে ডায়াজ জানান, ব্যারিমোরকে দীর্ঘদিন মাদকের ছোবলে আঘাত পেতে দেখা তার জন্য কষ্টদায়ক ছিল।
‘দ্য লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস’কে ডায়াজ বলেন, ব্যারিমোরের মাদক সংশ্লিষ্ট জীবনটি ছিল ভয়াবহ। তবে আমি জানতাম, আমরা সবাই যদি তার সাথে লেগে থাকি তাহলে সে তার পথ খুঁজে পাবে। তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার প্রতি ‘দৃঢ় বিশ্বাস’ ছিল আমার।
ব্যারিমোর সম্পর্কে ডায়াজ আরো বলেন, ছোটবেলায় তার টিকে থাকাটা কতটা কঠিন ছিল তা আপনারা বুঝতেও পারবেন না। তবু সে তিনি নিজেকে বাঁচানোর ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সকল বাঁধা টপকে গেছে।
এর আগে ড্রিউ ব্যারিমোর একাধিক সাক্ষাৎকারে নিজের মদ্যপানের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে তিনি ‘দ্য লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস’কে বলেছিলেন যে, তিনি প্রায় আড়াই বছর ধরে মাদক থেকে নিজেকে মুক্ত রাখছেন। এর আগে ২০১৬ সালে তার তৃতীয় স্বামী উইল কোপেলম্যানের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে প্রচুর পরিমাণে মদ্যপানের কথাও স্বীকার করেছিলেন অভিনেত্রী। এমনকি বিবাহবিচ্ছেদের পরে তার মদ্যপান এত তীব্র হয়ে ওঠে যে, ব্যারিমোরের থেরাপিস্ট ব্যারি মাইকেলস তার চিকিৎসা ছেড়ে দেন। এর দুই বছর পর ব্যারিমোর আবারও মাইকেলসের কাছে যান এবং পুনরায় থেরাপি শুরু করেন।
ব্যারিমোর জানান, তার বন্ধুদের হস্তক্ষেপ তার মাদকের জীবন থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করেছে। তবে টার্নিং পয়েন্ট ছিল, যখন তাকে ২০১৯ সালে তার টক শো ‘দ্য ড্রিউ ব্যারিমোর শো’-এর প্রস্তাব করা হয়। অভিনেত্রী বলেন, আমি মনে করি এই ধরনের একটি শো’তে সুযোগ পাওয়া সত্যিই আমাকে নতুন করে গড়তে সাহায্য করেছে।
শৈশব থেকেই মাদকের প্রতি ঝুঁকে যান অভিনেত্রী ব্যারিমোর। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই রিহ্যাবে জায়গা হয় তার। এরপর জীবনে একাধিকবার চড়াই-উৎরাই পার করেছেন। মাদক ছেড়েছেন, আবার মাদকে ডুবেছেন। তবে শেষের সংগ্রামটা একটু কঠিনই ছিল তার জন্য। যার উপস্থিত স্বাক্ষী তার প্রিয় বন্ধু ক্যামেরন ডায়াজ।
দুই অভিনেত্রীর বন্ধুত্ব শুরু হয়েছিল কয়েক দশক আগে। তখন মাত্র ১৪ বছর বয়সে ব্যারিমোর একটি কফি শপে কাজ করতেন, যেখানে ডায়াজ গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তাদের বন্ধুত্ব এবং এরপর ইন্ডাস্ট্রিতে ‘চার্লিস অ্যাঞ্জেলস’-এর মতো সুপারহিট চলচ্চিত্রে জুটি হয়ে দর্শক মাতিয়েছেন দুজন।
সূত্র : পিপল ডটকম